শেরপুরে ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত।

সোহাগী আক্তার | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২১ ০৪:৫১; আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১৪

ছবিঃ সংগৃহীত

শত শত বছর থেকে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে শেরপুরে। স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী সুদীর্ঘকাল থেকে এ মেলার আয়োজন করে আসছে। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে শেরপুর পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের নবীনগর মহল্লার ফসলি জমির মাঠে বসেছে এ মেলা। মেলায় বিভিন্ন পিঠা, মিষ্টি, সাজ, মুখরোচক খাবারসহ বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মজাদার খাবা্রের দোকান বসে। এছাড়া শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মাটির তৈরী বিভিন্ন তৈজসপ্ত্র, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালার দোকান সাজিয়ে বসে দোকানীরা। বেচা বিক্রিও চলে বেশ। মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়।

এদিকে মেলার আশেপাশে স্থানীয় গ্রামবাসীর ঘরে ঘরে চলে পিঠা-পায়েশ খাওয়ার উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে প্রতি বাড়িতেই দূর-দূরান্তের আত্মীয়রা ছুটে আসে পিঠা খেতে এবং মেলা দেখতে। একসময় বাঙ্গালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে পূর্ব পুরুষদের রেওয়াজ অনুযায়ী গ্রামের মানুষ ভোরে উঠে হলুদ ও সর্ষে বাটা দিয়ে গোসল করতেন এবং বাড়ির মেয়েরা ব্যস্ত থাকেন পিঠা-পায়েস তৈরীতে। দিন ব্যাপী চলতো অতিথি আপ্যায়ন এবং বিকেলে ছুটে যায় গ্রামের মেলার মাঠে। তবে এখন হলুদ সর্ষের রেওয়াজ আর না থাকলেও অনেক বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের আগমন ও পিঠা উৎসবের রেওয়াজ রয়েছে। জেলার বাইরে অবস্থানরত নারী-পুরুষ মেলা উপলক্ষে শেরপুর চলে আসে। বিবাহিত মেয়েরা বাবার বাড়িতে নাইয়রি বা বেড়াতে আসে এ মেলা উপলক্ষে।

শহরের অদূরে এবং পৌর এলাকার মধ্যে এ মেলার আয়োজন করা হলেও কোন রকম প্রচারণা চালানো ছাড়াই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায় মেলায়। কত বছর পূর্বে এ মেলার প্রচলন হয়েছিল তা কেউ সঠিক করে বলতে না পারলেও প্রায় এক শত বছরের উপরে বলে স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ ও গ্রামবাসী মনে করেন। এ মেলা মূলত ৩০ পৌষ অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তির মেলা হলেও এবার মেলার স্থানে কৃষকরা তাদের বোরো আবাদ করার জন্য মাঠ তৈরী প্রস্তুতির জন্য মেলার তারিখ কয়েক দিন আগে নির্ধারণ করা হয়। মেলায় প্রতি বছর অন্যতম আকর্ষণ ঘোর দৌড়ের পাশাপাশি গাঙ্গি খেলা ও সাইকেল রেস হলেও এবার র‌্যাফেল ড্র ও মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিন দিন এ মেলার আকর্ষণ ও লোক সমাগমও বাড়ছে বলে আয়োজকরা জানায়। এবার শেরপুর জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসে ২০ জন ঘোড় সোয়াররা। অপরদিকে গাঙ্গি খেলা, মিউজিক্যাল চেয়ার ও সাইকেল রেসে অর্ধশত খেলোয়াড় অংশ নেয়।





এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top