ভ্যাকসিন নেই লাম্পি স্কিন রোগের: মারা যাচ্ছে গরু

মো: হারুন অর রশিদ | প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৩ ০৮:৪০; আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ০৮:৫৮

ছবি: শেরপুর ট্রিবিউন

ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ইতোমধ্যে এই রোগে আক্রান্ত বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। তাই আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজস্ব উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন উপজেলার নয়াবিল, পলাশীকুড়া, আন্ধারুপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওয়াকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাঈদের একটি বকনা বাছুর মারা গেছে। এর আগে গত ৩ মে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই গ্রামের কৃষক আবদুল মতিনের প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গর্ভবতী গরু এবং আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান মানিকের প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ষাঁড় বাছুর মারা যায়।

❝এই ভাইরাস ক্ষণে ক্ষণেই মিউটেশন হচ্ছে, আকৃতি প্রকৃতি বদলাচ্ছে। আমরা এই রোগের নানান ভ্যারিয়েন্ট লক্ষ করছি। সব ভ্যারিয়েন্টের জিনোমিক কাঠামো আলাদা করা সম্ভব হলে এই রোগকে শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।❞

ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রায় দুই মাস আগে গরুর শরীরে এই লাম্পি স্কিন রোগের দেখা মেলে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায়, পচন ধরে ও রক্ত বের হয়। গরুর শরীরে জ্বর থাকে। গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে গরু মারা যায়। বর্তমানে রোগটি উপজেলার প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পলাশীকুড়া গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমার খামারে ১১টি গরু আছে। এর মধ্যে দেড় বছর বয়সী একটি ষাঁড় বাছুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এখনো সুস্থ হয়ে ওঠেনি। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রায় ৬ হাজার টাকার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খামারের বাকি গরুগুলো নিয়ে চিন্তায় আছি।’

আন্ধারুপাড়া গ্রামের লালচাঁন মিয়ার তিনটি ষাঁড় আক্রান্ত হলে চিকিৎসায় একটি সুস্থ হয়েছে, বাকি দুটির চিকিৎসা চলছে। এ ছাড়া ওই এলাকার কৃষক রুহুল আমীনের একটি, মুনসুর আলীর একটি ও পলাশীকুড়া গ্রামের কৃষাণী আম্বিয়া খাতুনের একটি গরুর চিকিৎসা চলছে। তাঁরা বলেন, এই লাম্পি স্কিন রোগ যাতে আর না ছড়ায়, সে জন্য দ্রুত আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুকে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা দরকার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নালিতাবাড়ী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মো: আবু সাঈম বলেন, লাম্পি স্কিন নতুন রোগ। এর অরিজিনাল কোন ভ্যাক্সিন নেই। লাম্পির ভাইরাস আর গোট পক্সের ভাইরাসের মধ্যে অনেক মিল থাকায় এই ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। তবে শতভাগ প্রতিরোধ করা যাচ্ছেনা। এই ভাইরাস ক্ষণে ক্ষণেই মিউটেশন হচ্ছে, আকৃতি প্রকৃতি বদলাচ্ছে। আমরা এই রোগের নানান ভ্যারিয়েন্ট লক্ষ করছি। সব ভ্যারিয়েন্টের জিনোমিক কাঠামো আলাদা করা সম্ভব হলে এই রোগকে শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।





এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top