ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকারী কখনোই আওয়ামী লীগ সভাপতি হতে পারেনা : ফারুক আহমেদ
শেরপুর ট্রিবিউন | প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২২ ১২:৫২; আপডেট: ২৭ মে ২০২২ ১২:৫৪
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখা'র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২২ কে কেন্দ্র করে দলীয় ফোরামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন খোদ দলেরই হাই কমান্ড এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। সম্মেলনের দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কমিটি ঘোষণা হয়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। দুই পক্ষই নানান অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
২৩ মে (সোমবার) উপজলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেস নাইম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। দুইজন ব্যক্তি এবং একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদনও করেন তিনি।
২৫ মে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর একটি বড় অংশ পালটা সংবাদ সম্মেলন করেছে। এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেস নাইমের অসত্য বক্তব্য ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের ওভিযোগ এনে নেতাকর্মিদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনের পর ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ বিবৃতি প্রদান করেন। ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকারী কখনোই আওয়ামী লীগ সভাপতি হতে পারেনা বলে জোর দাবি জানান তিনি।
তিনি জানান, গত ২৩ মে শেরপুর প্রেসক্লাবে এসএমএ ওয়ারেজ নাইম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে যে বিভ্রান্তিমূলক, অসত্য, অসম্পুর্ণ, বানোয়াট, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন তথ্য উত্থাপন করে সাংবাদিকদের দিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে নাইম ১৯৯০ পরবর্তী স্বৈরাচার বিরোধী কোন আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন না। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষে কোন কাজ করেনি। সে ২০০১ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করে প্রাথমিক সদস্য পদ লাভ করে ২০০৮ সালে শেরপুর-৩ আসনের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে নৌকার বিজয় ঠেকাতে বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার মো. খুররমের কলস প্রতীকের পক্ষে অর্থ প্রদান সহ কাজ করেছেন।
এছাড়াও আব্দুল্লাহেল ওয়ারেস নাইম অগণতান্ত্রিক ও অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগে কোন্দল সৃষ্টি করে দলের মধ্যে আওয়ামীলীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীত মতাদর্শের লোকেদের অনুপ্রবেশ ঘটানো ও দলের দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জেল খাটানোসহ ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এক তর্ফা কমিটি গঠন করে আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন বলেও দাবি করেন ফারুক।
নাইম ২০১৪ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের পূর্বে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ৮১ জন দলীয় নেতার নামে ২টি মিথ্যা ও স্বরযন্ত্রমূলক মামলা রুজু করে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, এরশাদ বিরোধী আন্দোলন ও বিএনপি জামাত জোট বিরোধী আন্দোলনের ত্যাগী, নির্যাতিত ব্যক্তিদের জেল হাজতে প্রেরণ করে এক তরফাভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করেন বলে মন্তব্য করেন ফারুক।
ফারুক আরও জানান, বিগত ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতীবান্দা ইউনিয়নে ওয়ার্ড বিএনপির ২১ নং সদস্য হাজী ওবায়দুল ইসলামকে এবং ধানশাইল ইউনিয়নে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুর রহমান এনামুলকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেন। উক্ত মনোনয়নের রেজুলেশনে তিনি দলীয় সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান লেবুর স্বাক্ষর জাল করেন।
এছাড়া গৌরীপুর ইউনিয়নে তার অনুগত বিদ্রোহী প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম পলাশের পক্ষে প্রচারণা চালান। ফলে উক্ত ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাত্র ২৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। বিজয়ী বিদ্রোহী পলাশের সম্বর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নাইম প্রমাণ করেছেন নাইম বিদ্রোহীদের মদদদাতা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির নিকট ছাত্রলীগ নেতা হত্যাকারী, ফ্রিডম পার্টির নেতা নাইমকে আজীবনের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কারের দাবী জানিয়েছেন ফারুক আহমেদ।