03/12/2025 প্রখ্যাত সাংবাদিক বজলুর রহমানের ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
সাদেকুর রহমান বাবু
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:০৪
পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক বজলুর রহমানের ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১২ বৎসর পূর্বে অর্থাৎ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সালে শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী নকলা উপজেলার ৫ নং বানেশ্বরর্দী ইউনিয়ন পরিষদের নিকটবর্তী নিজ গ্রামে, মহান মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ""দৈনিক সংবাদ"" এর সম্পাদক বজলুর রহমান মৃত্যু বরণ করেন। সে মোতাবেক আগামীকাল ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
বজলুর রহমান তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামে ১৯৪১ সালের ৩ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী আব্দুর রহমান। তিনি,স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাশ করে নকলা উপজেলার গণপদ্দি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও বরিশালের বজ্রমহন কলেজে পড়াশোনা করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
বজলুর রহমান সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করার পর ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখার সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে কঁচি কাঁচাদের শিশু সংগঠন খেলা ঘর নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেন। তার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের প্রায় ৩০টি জেলায় খেলা ঘর নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর ৫৮ সালের আইয়ূব বিরুধী আন্দোলনে সোচ্চার হন। পর্যায়ক্রমে ৬২’র শরীফ শিক্ষা কমিশন আন্দোলন , ৬৬’র ৬দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুথান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।
তাছারা, প্রথিতযশা সাংবাদিক বজলুর রহমান তাঁর লেখায় ""সংবাদ পত্রিকার"" মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন সংবাদের এক সাহসী কলম সৈনিক। বজলুর রহমান মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে লেখালেখি করে পরামর্শ মূলক লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। নরসিন্দি জেলার ব্যারিস্টার আহমেদ-উল কবিরের সংবাদে দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন। ৯৬ এর পরে নিজে সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ছাত্র জীবন শেষ করে, তৎকালীন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে,তাদের দুজনই রেখেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক অবধান ।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখার মধ্যদিয়ে বজলুর রহমান ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাতটার সময় পুরান ঢাকার ওয়ারলেস গেইটে সাবেক সফল কৃষিমন্ত্রী বাংলার অগ্নিকন্যা খ্যাত বেগম মতিয়া চৌধুরীর সরকারি বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকার কার্ডিয়াক হাসপাতালে বিশেষ কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ ফেব্রুয়ারী শেষ নিঃস্বাশ ত্যাগ করেন।
মরহুম বজলুর রহমানের মৃত্যুতে দেশের সংবাদ মাধ্যম শোকাহত হয়ে পড়েছিলো। নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের প্রথম জানাযার নামাজ শেষে, ২য় জানাযা নামাজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।