বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে পরকীয়া; তরুনীর সর্বস্ব কেড়ে নিলো স্কুল শিক্ষক মাহফুজ

হারুন অর রশিদ | প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২১ ০১:২১; আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২১ ০১:৩০

স্কুল শিক্ষক মাহফুজ হাসান

বিবাহিত সুন্দরী তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শরীর, অর্থ ও সংসার- সবই কেড়ে নিয়েছে স্কুল শিক্ষক মাহফুজ হাসান (৩০)। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বরকত আলীর ছেলে মাহফুজ হাসান বেগম রওশন-ডাঃ আমজাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

ভুক্তভোগী তরুণী জানায় ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার আসকা গ্রামের আলমগীর হোসেনের কন্যা ২০০৯ সালে ৮ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তার নানা বাড়ি নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামে বেড়াতে আসে। ওই সময় একই গ্রামের বরকত আলীর তরুন ছেলে মাহফুজ হাসানের সাথে তার পরিচয় হয়। মাত্র সপ্তাহ খানেকের পারস্পারিক ভালো লাগার পর ওই কিশোরী পিত্রালয়ে চলে গেলে আর কোন যোগাযোগ হয়নি। এরপর ২০১২ সালে মাহফুজ প্রেম করে বিয়ে করে ফেলে। অন্যদিকে ২০১৩ সালে ওই তরুণীর বিয়ে হয়ে যায় গাজীপুরের কড্ডা এলাকার জনৈক যুবকের সঙ্গে। উভয়ের সংসারে একটি করে সন্তানও রয়েছে।

২০১৮ সালে ওই তরুনী সন্তানসহ নানাবাড়ি কাকরকান্দিতে বেড়াতে এলে পুনরায় মাহফুজের সাথে দেখা হয়। এসময় মাহফুজ ওই তরুনীকে পেছনের কথা স্মরণ করিয়ে পুনরায় সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে নানান কৌশলের আশ্রয় নেয়। সেই থেকেই বর্তমান স্কুল শিক্ষক মাহফুজ ও তরুনীর মধ্যে পরকীয়া চলছিল।
এরই মধ্যে মাহফুজ বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বর্তমানে একটি মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারে চাকরী করা ও ভাওয়াল বদরে আলম কলেজে অধ্যয়নরত ওই তরুনীর কাছ থেকে তিন লক্ষাধিক টাকা ঋণ হিসেবে নেয়। কিছুদিন আগে পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকী টাকা পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করে মওকুফ করতে বলে মাহফুজ।

অগাধ বিশ্বাসে ওই তরুনী এ নিয়ে কোন কথা না বাড়িয়ে সম্পর্কের কাছে নিজের শরীর সহ সবকিছু বিলিয়ে দেয়। একপর্যায়ে গতবছরের শেষ দিকে বিয়ের কথা বললে স্কুল শিক্ষক মাহফুজ আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিতে পরামর্শ দেয়। পরামর্শ মেনে তরুনী গেলো বছরের শেষ দিকেই তার স্বামীকে তালাক দেয়। এরপর থেকেই মাহফুজ নিজেকে গুটিয়ে আনতে শুরু করে। একপর্যায়ে মোবাইল নাম্বার পাল্টে যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ করে দেয়। বাধ্য হয়েই সংসার ভাঙা তরুনী যোগাযোগের নানান মাধ্যম সন্ধান করে। শেষ পর্যন্ত গতকাল ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে বিয়ের দাবী নিয়ে মাহফুজের বাড়ি হাজির হয়। এসময় মাহফুজের বাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে তরুনী সাথে থাকা স্যাভলন পান করে আত্মহননের চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে ওই তরুনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মাহফুজ হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কাকরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ তালুকদার মুকুল ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত রয়েছেন মর্মে নিশ্চিত করেছেন।

এবিষয়ে বেগম রওশন-ডাঃ আমজাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকসানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এমনকিছু হয়েছে বলে জানতাম না। তবে ঐ শিক্ষক বন্ধুত্ব করে কথাবার্তা বলতো বলে জানি এবং সে স্বীকারও করেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার তৌফিকুল ইসলাম জানান, কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নৈতিক স্থলনের অভিযোগ উঠলে নিয়মানুযায়ী তাকে সাময়িক বহিস্কার করতে হয়। আমাদের কাছে এমন কোন বিষয় পরিলক্ষিত হলে আমরা নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।





এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top